তুমি খুব মিষ্টি পছন্দ কর। তোমার সামনে এক থালা রসগোল্লা রাখা হলো। তোমার মুখের ভিতর কোনো পরিবর্তন লক্ষ করছ কি? তোমার মুখের ভিতর কোনো পানির মতো তরল পদার্থের উপস্থিতি অনুভব করছ কি? তোমার ডান হাতটি ভাল করে সাবান দিয়ে ধুয়ে নাও। পরিষ্কার আঙ্গুল দিয়ে জিহ্বা থেকে কিছুটা তরল পদার্থ নাও। এর বর্ণ কেমন?
উপরের পরীক্ষা থেকে যা জানলাম তা নিম্নের বর্ণনার সাথে মিলিয়ে নেই। আমরা মুখ দিয়ে খাবার খাই। খাবার মুখে নিয়ে আমরা তা দাঁত দিয়ে চিবুতে থাকি। জিহ্বা খাবারগুলোকে নেড়েচেড়ে দেয় যেন এগুলো ভাল করে চিবানো যায়। মুখের মধ্যে ঐ খাবারগুলো লালার সাথে মিশ্রিত হয়। লালা একপ্রকার বর্ণহীন তরল পদার্থ। মুখের পেছনে অবস্থিত লালাগ্রন্থি থেকে লালা নিঃসৃত হয়। খাদ্য পরিপাকে লালার বিশেষ ভূমিকা আছে। লালা খাদ্যবস্তুকে পিচ্ছিল করে ও গিলতে সাহায্য করে। লালায় এক ধরনের অনুঘটক বা এনজাইম থাকে। তোমরা হয়তো ভাবছো এনজাইম কী? এনজাইম হলো:
লালার এনজাইম শ্বেতসারকে পরিবর্তন করে শর্করায় (মলটোজ) পরিণত করে। এ কারণে শর্করা জাতীয় খাবার চিবানোর পর কিছুক্ষণ মুখে রাখলে মিষ্টি লাগে। জিহ্বা আমাদের খাদ্যবস্তু গিলতে সাহায্য করে। মুখের শেষ প্রান্ত থেকে দুটি নল আমাদের দেহের ভিতরের দিকে নেমে গেছে। এদের একটি অন্ননালী ও অন্যটি শ্বাসনালি। শ্বাসনালির পেছনে নলের মতো অংশটিকে অন্ননালী বলে। এই নালি দিয়ে খাদ্য ও পানীয় পাকস্থলিতে পৌঁছায়।
খাদ্য কীভাবে পাকস্থলিতে পৌঁছায় নিজেরা কর একটি রাবারের নল ও একটি মার্বেল নাও। খেয়াল রাখতে হবে, নলের পরিধির চেয়ে মার্বেলটি যেন বড়ো হয়। মার্বেলটিকে নলের ভিতর প্রবেশ করাও। এবার মার্বেলের পেছনদিক ঠেলতে থাক। ওটা নলের ভিতর দিয়ে সামনের দিকে এগোতে থাকবে। এভাবে খাদ্য অন্ননালির ভিতর দিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হয়। অন্ননালিতে আর্থটির মতো গোল পেশি রয়েছে। এই পেশিগুলো সংকোচন ও প্রসারণ করতে পারে। খাদ্যবস্তুর পেছনে অন্ননালির পেশি সংকুচিত হয় এবং সামনে অন্ননালির পেশি প্রসারিত হয়। অন্ননালির এরূপ সংকোচন ও প্রসারণকে ক্রমসংকোচনত্রা পেরিস্টালসিস বলে। এভাবে সংকোচন ও প্রসারণের ফলে খাদ্যবস্তু ধীরে ধীরে পাকস্থলিতে পৌঁছায়। |
common.read_more